জাতীয় পর্যায়ে মোবাইল এপ্লিকেশন উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচি প্রকল্পের স্বাক্ষর ও ফাইল হস্তান্তর অনুষ্ঠান

By admin

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৬.৮৩৫ বিলিয়ন মোবাইল সিম ব্যবহারকারী থাকায় একথা এখন র্নিদ্বিধায় বলা যায় যে, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অপরিহার্য যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ‘মোবাইল ফোন’। আর এবছরই এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান মতে মোবাইল নিবন্ধনকারীর সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বাদশ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে মোট মোবাইল নিবন্ধনকারীর সংখ্যা ১০১.২০৫ মিলিয়ন এবং মোবাইল পেনিট্রেশন ৬৬.৩৬% যা প্রতিবছর ১০% হারে বাড়ছে। একই সাথে মোবাইল ফোনকে যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি এর বিভিন্ন এপ্লিকেশনের ব্যবহারও পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ২০১২ সালের পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বে মোট ১.২ বিলিয়ন মানুষ মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেছেন এবং প্রতিবছর তা ২৯.৮% হাওে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ক্রমবর্ধমান মোবাইলীয় পৃথিবীর সাথে তাল মেলাতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশনের আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এই লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় “জাতীয় পর্যায়ে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতাবৃদ্ধি কর্মসূচি” গ্রহণ করেছে। আলোচ্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন উন্নয়ন বিষয়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানকে বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও জনসাধারণের ব্যবহারের মাত্রা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন সরকারের‘রূপকল্প ২০২১: ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। যার ফলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিশ্বমানের আইসিটি পেশাজীবি তৈরি হবে। পরিসংখ্যান আরো বলছে যে, এ বছরে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশনের সরাসরি ডাউনলোড থেকে সফটওয়্যার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এবং মোবাইল বাজারগুলো মোট আয় করছে ৮.১ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী ২০১৬ সালে মোবাইল এ্যাপ্লিকেশনের সরাসরি ডাউনলোড থেকে আয় হবে ২১.৭ বিলিয়ন ডলার। এই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিশাল বাজারে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে মানব সম্পদের দক্ষতাবৃদ্ধি এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য। এ কথা সর্বজন বিদিত যে, একটি সমৃদ্ধ সফটওয়্যার শিল্প গড়ে উঠলে তাঅভ্যন্তরীণ ও বিশ্ববাজারের চাহিদা মেটাতে, বৈদেশিক বাণিজ্য হতে আয় বাড়াতে, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং আমদানী নির্ভরশীলতা কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এইকর্মসূচি সে ধরনের সফটওয়্যার শিল্প পরিবেশ (ইকো সিস্টেম) বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে যাতে একদিকে যেমন তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক জনসেবা প্রদান নিশ্চিত হবে তেমন ডিজিটাল ডিভাইড দূরীকরণে আইসিটি খাতের উন্নয়ন কেবল রাজধানী ঢাকায় নয় বরং রাজধানীর বাইরেও বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা যাবে। এই কর্মসূচীর আওতায় বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি খাতে মোবাইল এ্যাপস এর প্রয়োজনীয়তা ও চাহিদা যাচাই বাছাই পূর্বক যুগোপযোগী এ্যাপস আইডিয়া প্রস্তুত, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেই সকল আইডিয়ার সংকলন প্রকাশ করা, প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ের জন্য অন্তত একটি করে কার্যকর মোবাইল এ্যাপস নির্মাণ, ৭টি বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে বুট ক্যাম্প, দেশের ৬৪ জেলার ছাত্রছাত্রীদের ডিজিটাল কনটেন্ট সম্পর্কে ধারণা প্রদানের পাশাপাশি তাদেরকে এ্যাপস নির্মানের প্রশিক্ষণ প্রদান, সংগ্রহিত আইডিয়া থেকে এ্যাপস নির্মাণের ব্যবস্থা, এক একটি সরকারি অফিসের জন্য একটি করে কার্যকরী মোবাইল এ্যাপস প্রস্তুত, জাতীয় পর্যায়ে এ্যাপস নির্মাণের প্রতিযোগিতা আয়োজনের পাশাপাশি এই সকল কনটেন্টের মাধ্যমে একটি রিসোর্স পোর্টাল প্রস্তুত ও সর্বসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করাই এই কর্মসূচীর প্রকৃত উদ্দেশ্য।

Mobile-Application-Development-Program-Signing-Press-Release-1

এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে এমসিসি লি. এবং ইএটিএল। এছাড়াও পুরো প্রক্রিয়াটির সহযোগি হিসেবে কাজ করছে বেসিস, মাইক্রোসফট, গ্রামীনফোন, সিমফনি, রবি, নোকিয়া, এসওএল কোয়েস্ট। 17 ই নভেম্বর 2013 বিকাল  ৩টায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এমসিসি লি. ও ইএটিএল কে এই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সচিব জনাব নজরুল ইসলাম খান এবং প্রকল্প প্রধান জনাব ড. আবুল হাসান। সচিব মহোদয় তার বক্তৃতায় বলেন, সরকারের লক্ষ্য দক্ষ আইটি ইন্টারপ্রেনার তৈরী করা। পোষাক শিল্পের উপর নির্ভরতা কমিয়ে এদেশের আইটি গ্রাজুয়েটদের জন্য একটি বড় বাজার তৈরী করতে হবে। এই লক্ষ্যে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। বেসিস সভাপতি, শামীম আহসান বলেন, আইসিটি ইন্টারপ্রেনার তৈরীর মাধ্যমে স্বল্প সময়ে আইটি সেক্টরে বাংলাদেশের আয় ৩০০ মিলিয়ন করার পাশাপাশি সরকারি সেবাসমূহ মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে এই ধরনের কর্মসূচীর কোন বিকল্প নেই। এমসিসি লি. এর প্রধান নির্বাহি আশ্রাফ আবির বলেন, আগামী ২০১৫ সাল নাগাদ স্মার্ট গভর্নেন্স পেতে এই প্রকল্প বড় ধরনের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার পাশাপাশি উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোকিয়া থেকে ইফতেখার হোসেন, গ্রামীন ফোনের সাইমা রহমান, গুগল এর কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী মনিরুল কবির, এসওএল এর এটিএম মাহবুব আলম, মাইক্রোসফট এর তানজিম সাকিব, রবির রেজানুর বারি এবং সিমফনির রেজওয়ানুল হক প্রমুখ।

 

পত্রিকায় দেখুন :

প্রথম আলো             : অ্যাপস নিয়ে বছর জুড়ে কর্মসূচি

Dhaka Tribune    : MoU signed to promote mobile application

Daily Sun              : MoU signed to promote mobile apps

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা : MoU signed to promote mobile application

বাংলা মেইল             : সব মন্ত্রণালয়ের জন্য তৈরী হবে মোবাইল এ্যাপ

Leave a Reply